প্রতিটি চেকের মেয়াদ থাকে ৬ মাস অর্থাৎ চেকে যে তারিখটি বসাবেন, সেই তারিখ থেকে পরবর্তী ৬ মাস পর্যন্ত উক্ত চেকটি দিয়ে আপনি ব্যংক থেকে টাকা তুলতে পারবেন। মনে করুন এই চেকটিতে তারিখের স্থানে লেখা আছে ১/৪/২০১৬ তাহলে এই চেকটি দিয়ে আপনি ৩০/১০/২০১৬ তারিখ পর্যন্ত টাকা তুলতে পারবেন। আর এই ৬ মাসের মধ্যে যদি আপনি চেকটি ব্যংকে জমা না দিতে পারেন, তবে উক্ত চেকটি দিয়ে আপনি আর টাকা তুলতে পারবেন না ।
তো মনে করি আপনি চেকটি ৬ মাস মেয়াদের মধ্যেই অর্থাৎ ১/৫/২০১৬ তারিখে ব্যংকে জমা দিলেন। কিন্তু ব্যংক থেকে আপনাকে বল্ল উক্ত ব্যংক একাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা নেই, এবং তারা আপনাকে চেকটি ফেরত দিয়ে দিল।
১. প্রথমে উক্ত ব্যাংক থেকে একটি চেক ডিজনার রসিদ নিবেন
২. উক্ত ডিজনার রসিদে চেকটি ডিজনার হওয়ার তারিখ এবং ডিজনার হওয়ার কারন উল্লেখ থাকবে এর পরে আপনাকে উক্ত ডিজনারের তারিখ থেকে পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে চেক প্রদান কারীর বরাবর একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠাতে হবে।
উক্ত নোটিশে আপনি তাকে অবহিত করবেন যে, তার প্রদত্ত চেকটি ব্যংক থেকে ডিজনার হয়েছে এবং উক্ত নোটিশে তাকে আল্টিমেটাম দিতে হবে যেন সে আপনার পাওনা টাকা নোটিশ প্রাপ্তির ৩০ দিনের মধ্যে পরিশোধ করে দেয় অন্যথায় আপনি তার বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন তো ধরে নিলাম আপনি লিগ্যাল নোটিশটি পাঠিয়েছেন ১০/৫/২০১৬ তারিখে অর্থাৎ চেকটি ডিজনার হওয়ার ১০ দিন পরে আপনি চেক দাতার বরাবর একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠালেন এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো লিগ্যাল নোটিশ পাঠানের তারিখ থেকে পরবর্তী ৩০ দিন পর্যন্ত আপনি চেক প্রদানকারীকে আপনার পাওনা টাকা পরিশোদের জন্য সময় দিতে হবেএই সময়ের মধ্যে আপনি তার বিরুদ্ধে চেকের মামলা করতে পারবেন না
অর্থাৎ ১০/৬/২০১৬ তারিখ পর্যন্ত আপনাকে অবশ্যই, চেক প্রদানকারীকে টাকা পরিশোধের জন্য সময় দিতে হবে এবং অন্তত ৩০ দিন অপেক্ষা করতে হবে ৩০ দিন সময় অতিবাহিত হওয়ার পরেও যদি, চেক প্রদানকারী আপনার পাওনা টাকা পরিশোধ না করে তবে এবার আপনি চেক প্রদানকারীর বিরুদ্ধে নেগোশিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট আইনে মামলা করতে পারবেন
যে দিন থেকে আপনার চেকটি মামলা করার অধিকারী হলো সেই দিন থেকে পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে আপনাকে অবশ্যই মামলাটি করতে হবে অন্যথাই আপনি আর নেগোশিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট আইনে মামলা করতে পারবেন না
এখানে দেখুন আপনি লিগ্যাল নোটিশটি পাঠিয়েছেন ১০/৫/২০১৬ তারিখে আর চেকটি মামলা করার অধিকারী হল ১০/০৬/২০১৬ তারিখে আপনাকে ১০/০৭/২০১৬ তারিখের মধ্যে অবশ্যই নেগোশিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট আইনে আইনে চেক ডিজনারের জন্য মামলা করতে হবে। আর যদি এই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আপনি মামলা না করতে পারেন তবে আপনি আর নেগোশিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট আইনে মামলা করতে পারবেন না।
তবে আপনি চেকের মাধ্যমে টাকা আদায়ের জন্য মানি স্যুটের মামলা করতে হবে এই মামলা অনেক দুর্বল একটি মামলা এবং এই মামলা করে টাকা আদায় করা অনেক সময় সাদ্য ব্যপার তো ধরেনিলাম আপনি চেকটি দিয়ে ২৫/৬/২০১৬ তারিখে নেগোশিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট আইনে মামলা করলেন।
তাহলে সংক্ষেপে যদি বলি একটি চেক দিয়ে নেগোশিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট আইনে মামলা করতে হলে প্রথমে আপনাকে ব্যংক থেকে চেকটি ডিজনার করাতে হবে । উক্ত ডিজনারের তারিখ থেকে পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে আপনাকে চেক প্রদানকারীর বরাবর একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠাতে হবে । লিগ্যাল নোটিশ যেদিন পাঠাবেন সেই দিন থেকে পরবর্তী ৩০ দিন আপনি চেক প্রদানকারীকে টাকা পরিশোধের সময় দিতে হবে । এবং যদি এই ৩০ দিনের মধ্যে চেক প্রদানকারী আপনার টাকা পরিশোধ না করতে পারে তবে ৩০ দিন অতিবাহিত হওয়ার পর পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে অবশ্যই আপনি চেকটি দিয়ে নেগোশিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট আইনে মামলা করতে হবে।
এই ভিডিও করার আমার একটাই মাত্র উদ্দেশ্য আর তা হল, আপনাদের একটু সচেতন করা, যাতে করে শুধুমাত্র সঠিক সময় মতো চেকটি দিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়ার কারনে অযথা হয়রানীর হাত থেকে রক্ষা পেতে পারেন।
চেক ডিজঅনার মামলা একটি ফৌজদারী অপরাধ মামলা। হস্তান্তরযোগ্য দলিল আইনের ১৩৮ ধারা মোতাবেক যদি কোন চেক ব্যাংক কর্তৃক তহবিল না থাকার কারণে প্রত্যাখ্যাত হয় এবং আইনগত নোটিশ প্রাপ্তির ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে চেকের অর্থ পরিশোধ না করা হয়, তখনই অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, বলে ধরা হয়।
Subscribe to our Youtube Milon365 Channel. Follow us on our Facebook and Twitter page.